সিলেটে এবারও গ্রীষ্মকালে অসময়ের টমেটো চাষ করেছেন চাষিরা। বিভাগের
কয়েক উপজলায় স্বল্প পরিসরে চাষিরা টমেটো গাছ লাগিয়েছেন। সিলেট কৃষি
বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) হর্টিকালচার বিভাগের এক গবেষণার মাধ্যমে এ অঞ্চলে
গ্রীষ্মকালে টমেটো চাষের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছে।সংশ্লিষ্টরা
বলেছেন, গ্রীষ্মকালে টমেটো চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। পতিত জমিগুলো
লাভজনক কৃষিভিত্তিক ফসল উৎপাদনে কাজে লাগানো যেতে পারে বলে অভিমত কৃষি
বিজ্ঞানীদের। গ্রীষ্মকালে টমেটো চাষ সম্ভব করার এ কার্যক্রম হাতে নেয়
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। এর আওতায় সিকৃবির গবেষণার মাধ্যমে বেশ
কিছু জাত উদ্ভাবন করা হয়। সিলেট অঞ্চলে এর চাষ শুরু হয়েছে ২০১৭ সালে, এ
নিয়ে গবেষণা শুরু হয় ২০১৫ সালে। ২০১৮ সালে নতুন জাতের বীজ পেয়ে কৃষকেরা
অসময়ের টমেটো চাষ করে লাভবান হয়েছেন।
স্থানীয় স‚ত্র জানায়, সিলেটসহ
সারা দেশে জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত কোনো টমেটো পাওয়া যেত না। শীতকালীন
কিছু টমেটো সংরক্ষণ করে সরবরাহ করা হতো। এগুলো বাজারে বিক্রি হতো ৩০ থেকে
৫০ টাকা কেজি দরে। অথচ সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে গ্রীষ্মকালেই প্রতি হেক্টরে
৪০ থেকে ৫০ টন টমেটো উৎপাদন করা সম্ভব। বাজার মূল্যের হিসাবেও প্রতি
হেক্টরে ৫ লাখ ১৮ হাজার ৫০০ টাকা ব্যয়ে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ের সম্ভাবনা
রয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের সহায়তায় প্রায় তিন বছর ধরে
সিলেট অঞ্চলে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষের সম্ভাব্যতা যাচাই ও গবেষণা চলে।
সিলেট অঞ্চলে চাষাবাদের জন্য গ্রীষ্মকালীন টমেটোর জাত বারি টমেটো-৪ এবং
বারি টমেটা-৫ ব্যবহার করা হয়। টমেটোর চারাগুলো গ্রাফটেড, নন-গ্রাফটেড,
হরমোনাল, নন-হরমোনাল ইত্যাদি ক্যাটাগরিতে লাগানো হয়। এ হাইব্রিড জাতগুলোয়
হরমোন ছাড়াই লাভজনক ফলন পাওয়া যাবে। তবে টমেটোটন নামে হরমোন প্রয়োগ করলে এর
ফলন আরও বাড়ানো সম্ভব।
সিলেটে অসময়ে টমেটো চাষে ব্যাপক সফলতা পাওয়া
গিয়েছে। হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলা, মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল ও
কমলগঞ্জ উপজেলায় ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রগ্রাম-২ (এনএটিপি-২)
এর সহায়তায় গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
নবীগঞ্জের আবদুল মুকিত গত
বছর প্রায় পনের শতক জমিতে টমেটোর চারা ৩০০০ কেজি ফলন পেয়েছেন। একই বছর
উপজেলার মেহরাজ ১০ শতক জমিতে, মো. মুকিত ৪০ শতক জমিতে, শ্রীমঙ্গল উপজেলার
নিজাম উদ্দিন ২০ শতক জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে লাভবান হয়েছেন।
উত্তর সমূহ